শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি :: শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভাড়াউড়া চা বাগানের বাবু স্টাফ শামীম আহমেদের বাসায় ২ নভেম্বর ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় ডাকাতের মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। ঘটনার ১৩ দিন পর ছদ্মবেশে অভিযান চালিয়ে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ এবং চুনারুঘাট থেকে দুই ডাকাত সর্দারকে গ্রেপ্তারে সক্ষম হয় মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত ডাকত সর্দারেরা হলেন হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার অলিপুর গ্রামের মৃত জলফু মিয়ার ছেলে স্বপন মিয়া এবং চুনারুঘাট উপজেলার কাচুয়া গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে ফজর আলী বাটন।
জানা গেছে, শীতকাল এলেই মৌলভীবাজার এলাকায় ডাকাতি বেড়ে যাায়। জুতা বিক্রেতার ছদ্মবেশে ডাকাত স্বপন বাড়ি টার্গেট করে। একই কায়দায় সে ১ নভেম্বর শামীম আহমদের বাড়ি চিহ্নিত এবং রোডম্যাপ তৈরি করে যায়। এরপর ২ নভেম্বর গভীর রাতে সঙ্গীদের নিয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটায়। এ ঘটনায় শামীম আহমেদ বাদী হয়ে শ্রীমঙ্গল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এর পরপরই অভিযানে নামে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ। ১৩ ধরে ছদ্মবেশ ধারণ করে ডাকাতদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে রোববার চুনারুঘাট উপজেলায় অভিযান চালিয়ে ২৩ মামলার আসামি ডাকাত সর্দার ফজর আলী বাটনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বাটুনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পরদিন সোমবার হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার অলিপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে মূল পরিকল্পনাকারী, ১০ মামলার আসামি অপর ডাকাত সর্দার স্বপন মিয়াকে গ্রেপ্তারে স্কষম হয় মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ। এতে সহায়তা করে হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ।
তাদের দেওয়া তথ্যমতে আরো ৪ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন মাধবপুর উপজেলার জমির আলীর ছেলে ফয়সল মিয়া, শ্রীমঙ্গলের কোরবান আলীর ছেলে সুমন মিয়া, শায়েস্তাগঞ্জের খালেক মিয়ার ছেলে শাহ আলম মিয়া, বানিয়াচংয়ের আবু শামার ছেলে ছয়ফুল মিয়া। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ফজর আলী জানান, তার নেতৃত্বাধীন ডাকাতদল মৌলভীবাজার জেলায় একের পর এক ডাকাতি সংগঠনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিলো।
মৌলভীবাজার সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) পরিমল চন্দ্র দেব জানান, ছদ্মবেশে ১৩ দিন ধরে ফজর আলী বাটনকে ধরতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হয়। চুনারুঘাট থানার সহযোগিতায় অবশেষে তাকে নিজ গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। আদালতের মাধ্যেম তারে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার ফারুক আহমদ জানান, আমরা স্বপ্ন দেখি ডাকাতমুক্ত মৌলভীবাজারের। সেজন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে শীত মৌসুমে মৌলভীবাজারে ডাকাতির ঘটনা ঘটে থাকে। গত বছর আমাদের কঠোর নজরদারি এবং জনগণের সাথে কাঁধ মিলিয়ে আমাদের কর্মতৎপরতার কারণে সাতটি থানার মধ্যে ছয়টি থানায় কোন প্রকার ডাকাতি সংঘটিত হয়নি।
শুধুমাত্র সদর থানায় দুটি ডাকাতি হয়েছিল। করোনার কারণে এবং গত বছর ডাকাতি করতে না পারায় বিভিন্ন গোপন সূত্রে জানা যায়, ডাকাতদল এবার শীতের আগমন ঘটতে না ঘুরতেই সংঘবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছে। সেজন্য শুরু থেকেই আমরা জোরদার কার্যক্রম পরিচালনা করতে চাই। কিন্তু চাহিদার তুলনায় জনবল ও যানবাহনের ঘাটতি থাকায় ‘পুলিশ-জনতা’ এর যৌথ প্রয়াসে গতবারের ন্যায় আমরা কাজ করে যাব। ডাকাতির সাথে জড়িত সবাইকে গ্রেফতারের জন্য আমাদের বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে।